মোঃ আরিফুল ইসলাম,হরিণাকুণ্ডু প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে ঋণ দেওয়ার কথা বলে ‘ঊষা ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ভুয়া এনজিও প্রতারণা করে সাধারণ মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঋণ না দিয়ে ওই এনজিওর কর্মকর্তারা এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন।
জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দেখানো হলেও তারা প্রতারণামূলকভাবে বিভিন্ন প্রচার ও কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। পৌর শহরের জুয়েলারি ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলামের মালিকানাধীন বাসা থেকে কয়েক দিন ধরে প্রাতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলছিল।এরপর কয়েক জন কর্মকর্তা সেজে বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অত্যন্ত মার্জিত ভাষায় নিজেদের ফাউন্ডেশনের পরিচয়ে ভিজিটিং কার্ড দিয়েছে।নানান কৌশলে গ্রাহকদের সাথে সখ্যতা তৈরী করে। এরপর ২ বছর মেয়াদী ঋণ প্রজেক্ট আছে বলে প্রত্যেককে জানায়। কিন্তু শর্ত মোতাবেক প্রতি লাখ ঋনের জন্য ১০ থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত সঞ্চয় জমা দেয়ার নিয়ম রয়েছে এবং পরবর্তীতে এটা ফেরতযোগ্য। এতে রাজি হয়ে ঋণ নিতে আগ্রহীরা সঞ্চয় জমা দিতে থাকে। এরপর সোমবার রাতের আঁধারে তারা হাওয়া হয়ে গেছে।প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় দেখানো হয়েছে ঢাকা উত্তরার রানাভোলায়।
উপজেলার,পারফলসী,তোলা,কুলবাড়িয়া , মান্দারতলাসহ একাধিক গ্রাম থেকে প্রায় দুইশতাধীক মানুষের কাছ থেকে এই প্রতারক চক্র প্রায় বিশ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগীরা মানবকন্ঠকে জানায়,শহরের জুয়েলারি ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলামের বাসায় এই এনজিওর অফিস সেটা জানার পরে তার বাসায় গিয়ে খোজ নিয়ে তরিকুলের কথায় ভরসা করে এই এনজিওতে সঞ্চয়ের টাকা দিয়েছি।
পারফলসী গ্রামের আব্দুল ওহাব জানান,আমার ছেলেকে প্রবাসে পাঠানোর জন্য আমি এই এনজিও থেকে ২লাখ টাকা ঋণ নিতে চেয়েছিলাম।ঊষা ফাউন্ডেশনের কর্মির কথার ফাদে পড়ে আমি ১০হাজার টাকা দিয়েছি।কিন্তু গতরাতে তারা পালিয়েছে শুনে আমি অফিসে গিয়ে অফিস তালাবন্ধ অবস্থায় দেখি।একই গ্রামে প্রায় দশজন এই প্রতারণার স্বীকার হয়েছে বলে জানাযায়।
চুলাকানি বাজারের ফল ব্যবসায়ী, জাফিরুল ইসলাম সহজ কিস্তিতে ২লাখ টাকা ব্যবসায়ীক লোন পাবেন এই আশায় জুয়েলারি ব্যবসায়ী তরিকুলের কথায় ১০হাজার টাকা দিয়েছেন এই ফাউন্ডেশনের কর্মীদের কাছে।
তবে এ বিষয়ে জানতে,ঊষা ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার পরিচয় দেওয়া জুয়েল হোসেনের ফোন নাম্বারে(০১৩২৭৮৭২৮৩৪)যোগাযোগ করতে গেলে নাম্বারটি বন্ধ পাওতা যায়।
বাসা মালিক তরিকুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শিউলি রানী জানান,ঊষা ফাউন্ডেশন নামের কোন এনজিও প্রতিষ্ঠান হরিণাকুণ্ডুতে আমাদের রেজিষ্ট্রেশনের তালিকায় নাই। ফলে এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবোনা।সমাজসেবা নিবন্ধনকৃত সংস্থা এধরনের ঋণ কার্যকলাপের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা জানান, আমার কাছে এখনও কেউ কোনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।